You are currently viewing কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়

কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়

কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় হলো কেটে যাওয়ার সাথে সাথে রক্ত পড়া বন্ধ করতে হবে, নরম সুতি কাপড় দিয়ে কাটা জায়গা বেঁধে রাখতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শক্রমে ঔষধ খেতে হবে।

কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায়

অনেক সময় হাত পা কিংবা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে যায়। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে ততক্ষণাত যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তাহলে দ্রুত ক্ষতস্থান নিরাময় করা সম্ভব। যে সকল ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে দ্রুত কাটা জায়গা নিরাময় করা যায় সে বিষয়গুলো নিচে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করা হলো। চলুন দেখে নেই, কাটা জায়গা তাড়াতাড়ি শুকানোর উপায় সমূহ।

  • হাত ধৌত করুন: সর্বপ্রথম আপনাকে সাবান এবং পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধৌত করতে হবে। কেননা হাতে যদি জীবাণু থাকে তাহলে তা ক্ষত অংশের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে রোগের কারণ হতে পারে। তাই হাত ধৌত করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • ক্ষতস্থান ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন: ক্ষতস্থান থেকে যাবতীয় ময়লা এবং জীবাণু ধ্বংস করার জন্য পানি দিয়ে কয়েক মিনিট ধুয়ে নিন। তবে মনে রাখবেন ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে কখনোই সাবান বা ক্ষার জাতীয় কোন কিছু ব্যবহার করা যাবে না। 
  • এন্টিসেপটিক ব্যবহার করুন: ক্ষতস্থানে অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড বা ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে করে ক্ষতস্থানে থাকা জীবাণু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দ্রুত ক্ষতস্থান শুকিয়ে আসবে। 
  • ক্ষতস্থান ঢেকে দিন: পরিষ্কার সুতি কাপড় কিংবা ব্যান্ডেজ দিয়ে ক্ষতস্থান চেপে ধরুন এবং হালকা করে বেঁধে রাখুন। এতে করে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
  • ক্ষতস্থান নিরাময় হচ্ছে কিনা নজর রাখুন: উপর উল্লেখিত পদ্ধতি ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে ক্ষতস্থান নিরময় হবে তবে যদি কোন কারণে ক্ষতস্থান নিরাময় না হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ভিতরে যদি কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া কিংবা জীবানু থেকে থাকে তাহলে কিন্তু ক্ষতস্থান পেকে পুজ হতে পারে। তাই অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে, এবং এই ধরনের কোন লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। 
  • ক্ষতস্থান সর্বদা পরিষ্কার এবং শুকনা রাখুন: ক্ষতস্থানে কখনোই পানি লাগানো যাবে না বরং সবসময় শুষ্ক রাখতে হবে। আর সব সময় আপনাকে সাবধান থাকতে হবে কোনভাবেই যেন ক্ষতস্থানে আঘাত না লাগে। কেননা ক্ষতস্থানে আঘাত লাগলে তা পুনরায় বেড়ে যেতে পারে।
  • ঔষধ সেবন করুন: ক্ষতস্থানে যদি অত্যধিক পরিমাণে ব্যথা অনুভূত হয় সেক্ষেত্রে পেইন কিলার বা ওভারদা কাউন্টার ঔষধ সেবন করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে ক্রয় করে পেইন কিলার ঔষধ সেবন করা যাবে না। 
  • ক্ষতস্থান চুলকাবেন না: ক্ষতস্থান শুকিয়ে আসার সময় চুলকানি দেখা দিতে পারে। তবে কোনোভাবেই সেখানে চুলকানো যাবে না। কেননা ক্ষতস্থানে চুলকালে সেখানে নখের মাধ্যমে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটতে পারে ফলে ক্ষতস্থান না শুকিয়ে বরং পেকে যেতে পারে তাই অবশ্যই আপনাকে সব সময় সাবধান থাকতে হবে, এবং ক্ষতস্থান চুলকানো থেকে বিরত থাকতে হবে। 
  কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন

  • ক্ষত যদি অনেক গভীর হয় কিংবা অনেক বেশি হয় সেক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
  • যদি কোন নোংরা কিংবা জীবনেযুক্ত অবজেক্টের মাধ্যমে ক্ষত হয় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
  • ক্ষতস্থানে কাচের টুকরা লেগে থাকলে।
  • প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও ক্ষতস্থান ভালো না হলে।
  • টিটেনাস হওয়ার আশঙ্কা থাকলে।

কাটা জায়গা শুকানোর মলম

কাটা জায়গা দ্রুত নিরাময় করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এন্টিসেপটিক জাতীয় ওয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করতে হবে। সময় মত ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এন্টিসেপটিক ওয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করলে দ্রুত কাটা জায়গায় শুকিয়ে যাবে। নিচে বেশ কিছু কাটা জায়গা শুকানোর মলমের নাম তুলে ধরা হলো। নিম্ন বর্ণিত মলমগুলো ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ফার্মেসি থেকে মলম ক্রয় করে ব্যবহার করা যাবে না। 

কাটা জায়গা শুকানোর মলম সমূহের নাম: 

  • Arodin
  • Viodin
  • Povikil
  • Povidye
  • Povidone
  • Protear

কাটা জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ

কাটা জায়গায় যদি ইনফেকশন হয় তাহলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। যে লক্ষণ গুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার কাটা জায়গায় ইনফেকশন হয়েছে কিনা। যে সকল লক্ষণ দেখা দিলে আপনাকে সাবধান হতে হবে এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে সেই লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করা হয়েছে। আসুন দেখে নেয়া যাক, কাটা জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ সমূহ।

  • ক্ষতস্থান লাল হওয়া: ক্ষতস্থান লাল হয়ে যাওয়া কাটা জায়গায় ইনফেকশনের অন্যতম একটি লক্ষণ। ক্ষতস্থান লাল হয়ে যাওয়া মানে হলো সেখানে ইনফেকশন হয়েছে এবং পুঁজ হতে পারে।
  • ফুলে যাওয়া: কাটা জায়গায় ইনফেকশন হওয়ার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হল আক্রান্ত স্থান ফুলে যাওয়া। আক্রান্ত স্থান যদি অত্যধিক পরিমাণে ভুলে যায় এবং ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে ধরে নিতে পারেন যে সেই স্থানে ইনফেকশন হয়েছে। তাই দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। 
  • ব্যথা হওয়া: কোন জায়গা কেটে গেলে সাধারনত ধীরে ধীরে সেখানকার ব্যথা কমে যায়। তবে যদি আপনি দেখতে পান যে আপনার কাঁটা স্থানের ব্যথা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাহলে অবশ্যই সেখানে ইনফেকশন হয়েছে, আর সে কারণেই ব্যথা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কাঁটা স্থানে ব্যথা বৃদ্ধি পেলে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 
  • পুঁজ হওয়া: করা স্থানে যদি পুঁজ জন্মে তাহলে অবশ্যই সেখানে ইনফেকশন হয়েছে। সাধারণত কাটা ঘায়ে মাছি পড়লে এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই মাছি থেকে অবশ্যই সব সময় সমাধান থাকতে হবে আর কোন কারণে যদি পুঁজ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। 
  • দুর্গন্ধ বের হওয়া: কাটা স্থান থেকে যদি অত্যাধিক পরিমাণে দুর্গন্ধ এবং দুর্গন্ধযুক্ত তরল নির্গত হয় তাহলে তা ইনফেকশনের একটি অন্যতম লক্ষণ। সাধারণত এই ধরনের সমস্যা হয় ইনফেকশন হলে।
  ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সমূহ জেনে নিন

কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে করণীয়

কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে অবশ্যই আপনাকে যথাযথ সম্ভব কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কেননা কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে যথাসময়ে চিকিৎসা না করার কারণে পরবর্তীতে অবস্থা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। তাই কাটা জায়গায় ইনফেকশন হলে বসে না থেকে কার্যকর চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসা গ্রহণ করার পাশাপাশি নিম্ন বর্ণিত নিয়ম কানুন গুলো যথাযথভাবে মেনে চললে আশা করা যায় দ্রুত এই সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি পাবেন।

  • ক্ষতস্থান পরিষ্কার করুন: আপনি যদি নিয়মিত ক্ষতস্থান পরিষ্কার করেন সে ক্ষেত্রে ইনফেকশন দ্রুত সেরে যাবে। চিকিৎসার পাশাপাশি যদি আপনি নিয়মিত ক্ষতস্থান পরিষ্কার করেন, তাহলে আশা করা যায় দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারবেন। 
  • অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করুন: ক্ষতস্থান নিরাময় করার জন্য অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করতে পারেন। এন্টি সেপটিক ব্যবহার করলে ক্ষতস্থানে থাকা জীবন ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ফলে দ্রুত ক্ষতস্থান নিরাময় হয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এন্টিসেপটিক ব্যবহার করা উচিত। 
  • ক্ষতস্থান ঢেকে রাখুন: অবশ্যই আপনাকে ক্ষতস্থান সর্বদা ঢেকে রাখতে হবে, কেননা ক্ষতস্থান থেকে না রাখলে সেখানে মশা মাছি পড়বে, আর যদি ক্ষতস্থানে মশা মাছি পরে সেক্ষেত্রে ইনফেকশন বেড়ে যেতে পারে তাই অবশ্যই সব সময় তা ঢেকে রাখতে হবে। 
  • প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন: ক্ষতস্থানের ইনফেকশন যদি অত্যধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজন হলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। 

Leave a Reply