মিল্ক শেক এর দাম সাধারণত ৯০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। তবে ব্রান্ডের ভিন্নতার কারণে এই দামের পরিবর্তন হতে পারে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এবং বিভিন্ন ধরনের মিল্ক শেক এর দাম এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই কোন ব্র্যান্ডের এবং কোন ধরনের মিল্ক শেক এর দাম কত? তা জানতে মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
মিল্ক শেক এর দাম কত?
নিচে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন ব্রান্ডের মিল্কশেকের মূল্য তালিকা তুলে ধরা হলো। নিচে যে সকল মিল্কশেকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর সবগুলোই ভাল ব্র্যান্ডের এবং ভালো মানের, তাই আপনি যেকোনো একটি ব্র্যান্ডের মিল্ক সেক খেতে পারেন। আসুন দেখে নেই, কোন ব্র্যান্ডের মিল্ক শেক এর দাম কত?
- Horlicks Classic Malt 450 Gm এর দাম: ৬২০ টাকা
- Nesquick Banana Flavour Milk Shake দাম: ৫৭৯ টাকা
- Weight gain Milk Shake For healthy দাম: ৳ ৩১০
- Calcium Nutrius Milk Shake দাম: ৮৪০ টাকা
- Maltova Health and Nutrition Drink BIB 400g এর দাম: ৪২০ টাকা
মিল্ক শেক এর উপকারিতা
মিল্কশেক শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকারে সাধন করে থাকে। কেননা মিল্কশেক সাধারণত পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে। আর তাই অনেকে শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার জন্য মিল্কশেক খেয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের শরীরের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম, তাদের ক্ষেত্রে মিল্কশেক খুবই উপকারী। আপনি যদি নির্দিষ্ট নিয়মে কিছুদিন মিল্ক শেক খান, সেক্ষেত্রে আপনার স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
মিল্ক শেক এর যেসকল উপকারিতা রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হবে। তাই যদি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন, তাহলে আশা করা যায় উপকৃত হতে পারবেন। তো দেরি না করে চলুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, মিল্ক শেক এর উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ: মিল্কশেকের প্রধান উপাদান হলো দুধ। যা ক্যালসিয়াম প্রোটিন ভিটামিন বি-১২ ভিটামিন ডি সহ পটাশিয়াম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাই মিল্ক শেক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হিসেবে বিবেচিত।
- দৈহিক শক্তি বৃদ্ধি করে: দুধের পাশাপাশি মিল্কসেকে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ফল বাদাম এবং আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদান মিশ্রিত থাকে ফলে মিল্কশেক খেলে তারা দৈহিক শক্তি বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- হাড়ের ক্ষয় রোধ করে: আপনার যদি হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে আপনি মিল্ক শেক খেতে পারেন। কেননা মিল্ক শেকে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি যা হার ক্ষয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে আপনার স্বাস্থ্য যদি স্থুল হয়ে সেক্ষেত্রে মিল্কশেক খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
- ওজন বৃদ্ধি করে: শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে মিল্কশেকের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এবং কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই যদি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে মিল্কশেক খেতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শক্রমে সঠিক নিয়মে মিল্কশেক খেলে আশা করি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি ওজন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবেন।
- শরীর হাইড্রেট রাখে: শরীর হাইড্রেট রাখতে মিল্ক শেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কেননা মিল্ক শেকে থাকা উপাদান সমূহ শরীর ঠান্ডা রাখে। তাই যদি আপনি শরীর হাইড্রেট রাখতে চান সে ক্ষেত্রে মিলকে খেতে পারেন।
মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম
মিল্ক শেক খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই, আপনি দিনের যে কোন সময় মিল্ক শেক খেতে পারেন। তবে অধিক উপকারিতা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন নিয়মিত দুই বেলা মিল্কশেক খাওয়া যেতে পারে। প্রতিদিন নিয়মিত দুই বেলা মিল্ক শেক খেলে তা ধীরে ধীরে আপনার শরীরকে পরিপুষ্ট এবং স্বাস্থ্যবান করে তুলবে।
মিল্ক শেক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অনেক উপকারিতা থাকলেও মিল্ক শেক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে কিছু। অর্থাৎ আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত নিজে নিজেই অধিক পরিমাণে দীর্ঘদিন পর্যন্ত মিল্ক শেক খান, সেক্ষেত্রে কিন্তু তা আপনার শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। অধিক পরিমাণ মিল্কশেক খেলে সাধারণত যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো নিচে বিস্তারিত হবে উল্লেখ করা হলো। তো চলুন দেখে নেই, মিল্ক শেক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমূহ।
- স্থুলতা বৃদ্ধি পায়: মিল্ক শেকে অধিক পরিমাণে পুষ্টি থাকার কারণে আপনি যদি দীর্ঘদিন পর্যন্ত অধিক মাত্রায় মিল্কশেক খেতে থাকেন সেক্ষেত্রে কিন্তু তা আপনার শরীরের স্থূলতা বৃদ্ধি করবে। তাই মিল্কশেক খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। এবং আপনার ওজন যদি ভারসাম্য থাকে সেক্ষেত্রে অধিক পরিমাণে মিল্কশেক না খাওয়াই ভালো।
- সুগার ইনটেক বৃদ্ধি পায়: অধিক পরিমাণে সুগার থাকার ফলে মিল্কশেক খেলে শরীরে সুগার ইনটেক বৃদ্ধি পায়। তাই যদি আপনার ডায়াবেটিস বা এই ধরনের কোন সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মিল্কশেক সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে।
- কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে: শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর যে সকল কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো মিল্ক শেক খাওয়া। অধিক পরিমাণে মিল্কশেক খেলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেতে পারে। সুতরাং অবশ্যই মিল্কশেক খাওয়ার ব্যাপারে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে।
- হজমে বিঘ্ন ঘটে: মিল্কশেকে অধিক পরিমাণে চর্বি থাকার ফলে তা হজমে বিঘ্ন ঘটায়। অর্থাৎ যদি আপনি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মিল্কশেক খান সেক্ষেত্রে কিন্তু তা হজমজনিত সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে, তাই অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শক্রমে পরিমিত পরিমানে মিল্কশেক খেতে হবে।
- এলার্জি বৃদ্ধি পায়: আপনার যদি এলার্জিজনিত সমস্যা থাকে তাহলে মিল্ক শেক খাওয়ার ব্যাপারে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে। কেননা মিল্কশেক এলার্জিজনিত সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে।
মিল্ক শেক বানানোর নিয়ম
বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিল্কশেক পাওয়া যায়, তবে চাইলে আপনি নিজেও ঘরে বসেই মিল্ক শেক তৈরি করতে পারেন। মিল্ক শেক তৈরি করা তেমন কঠিন কোন বিষয় নয়। হাতের নাগালে থাকা উপাদান দিয়ে খুব সহজেই আপনি ঘরে বসে তৈরি করতে পারবেন। আপনি যদি নিজে নিজে ঘরে বসে মিল্ক তৈরি করতে চান সে ক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। নিম্ন বর্ণিত পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব সহজেই মিল্ক শেক তৈরি করতে পারবেন। চলুন দেখে নেই, মিল্ক শেক বানানোর নিয়ম।
মিল্ক শেকের প্রধান উপাদান হলো দুধ। মূলত দুধ দিয়েই মিল্ক শেক তৈরি করতে হয়। চাইলে আপনি দুধের সাথে আপনার পছন্দের ফ্লেভার এড করতে পারেন। প্রথমে আপনাকে দুধ এবং আইসক্রিম এক জায়গায় মিক্স করে স্মুথ করে নিতে হবে। এরপর স্বাদ অনুযায়ী চিনি মিশ্রিত করলেই তা মিল্কশেকে পরিণত হবে।
অরিজিনাল মিল্ক শেক চেনার উপায়
মিল্ক শেকের যে সকল উপকারিতা রয়েছে তা পেতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে অরিজিনাল মিল্ক শেক খেতে হবে। কেননা যদি অরিজিনাল মিল্ক শেক না হয় সেক্ষেত্রে কিন্তু তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অরিজিনাল মিল্ক শেখ চিনতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অরিজিনাল মিল্কশেক চেনার অনেকগুলো উপায় রয়েছে। যেমন অরিজিনাল মিল্কশাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রিম থাকবে। যদি কোন মিল্ক শেকে ক্রিমের পরিমাণ কম দেখতে পান তাহলে ধরে নিতে পারেন যে সেই মিল্কশেক অরিজিনাল নয়। এছাড়া অরিজিনাল মিল্কশেকে অনেক ভালো ফ্লেভার থাকবে। যদি মিল্কশেকের ফ্লেভার ততটা ভালো না হয় তাহলে তা অরিজিনাল নয়।
অরিজিনাল মিল্ক শেকের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল এর মিষ্টি স্বাভাবিক হবে অর্থাৎ অনেক বেশি কিংবা খুব কম হবে না। অরিজিনাল মিল্ক শেক অনেক বেশি ঘন এবং সুস্বাদু হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে যে সকল মিল্ক শেক অরিজিনাল নয় সেগুলো ততটা সুস্বাদু নয়।
শেষ কথা
মিল্ক শেক এর দাম এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই মিল্কশেকের দাম সহ মিল্ক সেক সম্পর্কিত সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। আশা করি তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার করবেন।