ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সমূহ জেনে নিন

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় হলো: ফাস্টফুড পরিহার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণেপানি পান করা এবং পরিমিত পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায় সমূহ সম্পর্কে নিচে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়

ব্যায়াম না করেও কি ওজন কমানো সম্ভব? জি সম্ভব। ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর উপায়সমূহ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েন, তাহলে আশা করা যায় উপকৃত হতে পারবেন। ব্যায়াম না করেও ওজন কমানোর যে সকল উপায় রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিমিত পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করুন

ব্যায়াম না করে ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজরে দিতে হবে। বিশেষ করে পরিমিত পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে, এবং অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালরিযুক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা অধিক পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

আবার, শরীরের ওজন কমাতে গিয়ে যদি আপনি একেবারেই ক্যালরি গ্রহণ করার বন্ধ করেন, তাহলে তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। তাই পরিমিত পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করার কথা বলা হচ্ছে। অর্থাৎ যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত খেলে যেমন শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে ঠিক তেমনি ভাবে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি গ্রহণ না করলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খান

ব্যায়াম না করে ওজন কমাতে চাইলে স্বাস্থ্যকর খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অনেকেই মনে করে থাকেন যে, খাবার খাওয়া কমিয়ে দিলেই ওজন কমে যাবে। এই ধরনের ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়।কেননা আপনি যদি শরীরের ওজন কমাতে গিয়ে একেবারেই খাওয়া বন্ধ করে দেন কিংবা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ না করেন তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

তাই প্রয়োজন মাফিক খেতে হবে, তবে অবশ্যই খাবার স্বাস্থ্যকর হতে হবে এবং খাবারে যেন প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রধান বিদ্যমান থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। পরিণত পরিমাণে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে আশা করা যায়, শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

কোমল পানীয় পরিহার করুন

কোমল পানীয় গুলোতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, আর চিনিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণে চিনিযুক্ত পানীয় পান করলে তা শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।তাই অবশ্যই আপনাকে সব ধরনের ড্রিঙ্কস পরিহার করতে হবে। বাজারে প্রচলিত যত কোল্ড ড্রিংস রয়েছে তার সবগুলোতেই অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি মিশ্রিত থাকে।

তাই যদি আপনি সুস্থ থাকতে চান এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই কমন পানীয় সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। এবং চিনি যুক্ত যেকোনো ধরনের খাবার পরিহার করতে হবে। তবে যদি খেতে চান সেক্ষেত্রে খুবই অল্প পরিমাণে খেতে হবে।

ফাস্টফুড পরিহার করুন

ফাস্টফুডে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে, আর অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করলে শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। তাই ফাস্টফুড অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। সুতরাং শরীরের ওজন স্বাভাবিক করতে এবং অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই ফাস্টফুড পরিহার করে চলতে হবে।

ফাইবার যুক্ত খাবার খান

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর একটি উপায় হল ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া। ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে তা শরীরে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত কার্যকর থাকে ফলে ক্ষুধা কম লাগে। আর ক্ষুধা কম লাগলে স্বাভাবিকভাবেই খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে আসবে। এবং খাবারের পরিমাণ কমে আসলে শরীরে থাকা অতিরিক্ত চর্বি গুলো বার্ন হবে ফলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন ধীরে ধীরে কমে আসবে।

তাই শরীরের ওজন কমানোর ক্ষেত্রেই ফাইবারযুক্ত খাবারের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নিয়মিত ভাইবার যুক্ত খাবার খেতে থাকেন, ধীরে ধীরে আপনার শরীরে থাকা অতিরিক্ত চর্বি গুলোকে বার্ন করবে। সুতরাং ফাইবার যুক্ত খাবার খান, শরীরের অতিরিক্ত জন কমান।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা অত্যাবশ্যক। আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করেন তাহলে তা আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করবেন। তাই অবশ্যই পানি প্রয়োজন অনুসারে পানি পান করতে হবে এবং সর্বদা হাইড্রেট থাকতে হবে।

আপনি যদি হাইড্রয়েড থাকেন তাহলে শরীরে খাবারের চাহিদা কমে আসবে এবং শরীরের অভ্যন্তরে থাকা অতিরিক্ত চর্বি বার্ন হবে এবং ধীরে ধীরে আপনার ওজন কমে আসবে।

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন

আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমান সে ক্ষেত্রে তার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষ করে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে তা শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে ধারণা করা হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করুন এবং শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুন।

তবে অবশ্যই দীর্ঘ সময় কিংবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই অবশ্যই অতিরিক্ত পরিমাণে ঘুমানো থাকতে হবে। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন হয়। এর থেকে কম কিংবা বেশি ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকুন

মানসিক প্রশান্তি কিংবা দুশ্চিন্তা বিভিন্ন রোগের প্রত্যক্ষ কারণ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে দুশ্চিন্তাযুক্ত ব্যক্তিরা অতিরিক্ত ওজন জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাই যদি আপনি অতিরিক্ত সমস্যা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চান তাহলে অবশ্যই দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।

গ্রিন টি পান করতে পারেন

ব্যায়াম না করে ওজন কমানোর আরেকটি কার্যকর উপায় হল নিয়মিত গ্রীন টি পান করা। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি’র ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যায় গ্রিন টি পান করেন তাহলে তা আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর অন্যান্য উপায় গুলো অবলম্বন করার পাশাপাশি গ্রীন টি পান করলে তা অধিক কার্যকর হবে। এছাড়াও গ্রীন টি পান করলে তার শরীরের আরও বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে। তাই সুস্থ থাকার জন্য এবং অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি পান করা যেতে পারে।

নিয়মিত শসার সালাদ খেতে পারেন

শসা শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে খুবই কার্যকর এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত শসা খেলে তা অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সহায়তা করি। তাই আপনি যে কোন খাবারের সাথে সালাদ সালাদ খেতে পারেন। প্রতিদিন সকাল দুপুরে বিকাল তিনবেলা যদি আপনি খাবারের সাথে শসার সালাত খেতে পারেন, তাহলে তার দ্রুত আপনার ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Comment