You are currently viewing থাইরয়েড নরমাল কত | থাইরয়েড কমানোর উপায়

থাইরয়েড নরমাল কত | থাইরয়েড কমানোর উপায়

থাইরয়েড হলো প্রজাপতি আকৃতির এক ধরনের গ্লান্ড যা কণ্ঠমণির নিচে অবস্থিত। থাইরয়েড দুইটি লোব দ্বারা গঠিত একটি অন্তঃস্রাবী গ্রন্থি যা থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ এবং নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড গ্ল্যান্ড মূলত দুই ধরনের হরমোন নিঃসরণ করে থাকে সেগুলো হলো ট্রাইয়োডোথাইরোনিন (T3) এবং থাইরক্সিন (T4)।

থাইরয়েড কি

থাইরয়েড হলো একটি গ্লান্ড যা পুরুষের অ্যাডাম অ্যাপলসের ঠিক নিচে অবস্থিত। এই হরমোন গুলো মেটাবলিক রেট, সিন্থেসিস এবং প্রোটিন সহ বিভিন্ন টিস্যু এবং শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কে প্রভাবিত করে। থাইরয়েডের যাবতীয় কার্যক্রম ব্রেইনে থাকা পিটুইটারি গ্ল্যান্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। এটি থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ) তৈরি করে। এবং টিএসএইচ থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে ট্রাইয়োডোথাইরোনিন (T3) এবং থাইরক্সিন (T4) হরমন নিঃসরণের জন্য স্টিমুলেট করে। 

থাইরয়েড নরমাল কত

থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ) নরমাল রেঞ্জ হলো 0.4 to 4.0 mIU/L (milli-international units per liter)। যদি আপনার থাইরয়েড নরমাল থাকে তাহলে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন পক্ষান্তরে থাইরয়েড নরমাল না থাকলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

থাইরয়েড কমানোর উপায়

আপনার যদি থাইরয়েডের সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হবে। নিম্ন বর্ণিত পন্থাগুলো যথাযথভাবে অবলম্বন করলে আশা করা যায় আপনি থাইরয়েড কমাতে পারবেন। তো কথা না বাড়িয়ে চলুন দেখে নেওয়া যাক,  থাইরয়েড কমানোর উপায় সমূহ।

  • পরিমিত মাত্রায় খবর গ্রহণ করুন: অতিরিক্ত খাবার খেলে তা শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই অবশ্যই আপনাকে পরিমিত মাত্রায় খাবার গ্রহণ করতে হবে বিশেষ করে যদি আপনার থাইরয়েড জনিত সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত খাবার সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। 
  • আয়োডিনযুক্ত খাবার খান: আয়োডিনযুক্ত খাবার খেলে তা থাইরয়েডের হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। আর তাই আপনাকে অবশ্যই আয়োডিন যুক্ত খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে। 
  • মানসিক চাপ পরিহার করুন: আপনি যদি কোন ভাবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন, সেক্ষেত্রে কিন্তু তা আপনার থাইরয়েডের জন্য ক্ষতির কারণ। আর তাই অবশ্যই আপনাকে সব ধরনের মানসিক চাপ সম্পূর্ণ রূপে পরিহার করতে হবে। 
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ থাকতে চান সে ক্ষেত্রে ব্যায়ামের বিকল্প নেই অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা থাইরয়েড নিরাময়ের ক্ষেত্রে ভালো। 
  • পরিমিত ঘুম নিশ্চিত করুন: সুস্থ থাকার জন্য পরিমিত পরিমাণে ঘুম ঘুমানো গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি পর্যাপ্ত সময় ঘুমাতে না পারেন, তাহলে তা আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। 
  e cap 400 এর কাজ কি | ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়

থাইরয়েড নিরাময়ের ক্ষেত্রে খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত খাবার গুলোকে প্রাধান্য দেন তাহলে আশা করা যায় তা আপনার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। থাইরয়েডের সমস্যা হলে যে সকল খাবার আপনার স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো।

  • চর্বিবিহীন মাংস: চর্বিবিহীন মাংস স্বাস্থ্যের জন্য বরাবরই ভালো। বিশেষ করে আপনার যদি থাইরয়েডের সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে চর্বিগুণ মাংস অবশ্যই অপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চর্বিযুক্ত মাংস খেলে তা আপনার থাইরয়েড বৃদ্ধি করতে পারে আর তাই অবশ্যই আপনাকে মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাংস খেতে হবে। 
  • ফলমূল: বিভিন্ন ফলমূল বিশেষ করে, আপেল, নাশপাতি সহ ভিটামিন সি যুক্ত ফলগুলো থাইরয়েড রোগীদের থাইরয়েড স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তাই অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত আপেল নাশপাতি সহ সিজনাল ফলমূল খেতে হবে। 
  • শাকসবজি: আপনি যদি শাকসবজি খান সেক্ষেত্রে তা শুধু আপনার থাইরয়েডের সমস্যাকেই নিয়ন্ত্রণে রাখবে না বরং শাকসবজি খেলে তা আপনার ওভারঅল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। সুতরাং যদি আপনি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে আপনার খাবারের মেনুতে নিয়মিত শাকসবজি যুক্ত করুন। 
  • গোটা শস্য: গোটা শস্য বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের ডাল থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যদি আপনি সুস্থ থাকতে চান, সেক্ষেত্রে বেশি বেশি হোল গ্রেইন বা গোটা শস্য খেতে হবে। 
  • কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধ জাত খাবার: দুগ্ধজাত খাবার বা ডেইরি প্রোডাক্ট থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। তবে কম চর্বিযুক্ত  দুগ্ধজাত বা ডেইরি প্রোডাক্ট খেতে হবে। 
  • বাদাম: বাদামে রয়েছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন ই এবং ক্যালসিয়াম সহ আরো বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে তাই বাদাম খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ । 
  • ওমেগা ৩ এসিড সম্পন্ন খাবার: যে সকল ফল কিংবা সবজিতে অধিক পরিমাণে ওমেগা ৩ এসিড রয়েছে সেই ফলগুলো বেশি বেশি করে খেতে হবে কেননা ওমেগা ৩ এসিড থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। 
  • আয়রন যুক্ত খাবার: আয়রনযুক্ত খাবার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। তাই আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে থাইরয়েড জনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আয়রন সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি বেশি বেশি খেতে হবে। 
  • ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার: যে সকল খাবারে ভিটামিন ডি রয়েছে সেই খাবার গুলো বেশি বেশি খাবার চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে খাবারের তালিকায় সামুদ্রিক মাছ এবং ডিম খাবারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 
  মিল্ক শেক এর দাম কত? তা জেনে নিন

থাইরয়েড এর লক্ষণ

আপনার যদি থাইরয়েডের সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিলে সাধারণত যে সকল লক্ষণ প্রকাশ পায় সেগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।

  • অবসাদ।
  • ওজন দ্রুত কমে যাওয়া।
  • চুল পড়া।
  • ত্বক শুকিয়ে যাওয়া।
  • পেশী শক্তি কমে যাওয়া।

থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়

থাইরয়েড জনিত জটিলতা থাকলে হলে নিম্ন বর্ণিত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। তাই যদি আপনার নিম্ন বর্ণিত লক্ষণ গুলোর কোন একটি লক্ষণ প্রকাশ পায় সে ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে নিতে হবে যে আপনার থাইরয়েডের কোন সমস্যা রয়েছে কিনা! যাই হোক, আসুন দেখে নেয়া যাক, থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয়। 

  • মুড সুইং।
  • নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক ঋতুস্রাবে গন্ডগোল হওয়া।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য।
  • জয়েন্টে ব্যথা হওয়া।
  • গলা ফুলে যাওয়া।

থাইরয়েড কি ভালো হয়

কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও তা অনুধাবন করা যায় না। বড় কোন সমস্যা দেখা না দিলে অধিকাংশ মানুষই এই ব্যাপারে অসচেতন থাকে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে থাইরয়েডের সমস্যা বড় বড় লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। 

আপনারে থাইরয়েডের সমস্যা আছে কিনা তা অবশ্যই আপনাকে জেনে নিতে হবে। যদি আপনার মাঝে থাইরয়েডের কোন প্রকার লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। যদি আপনি ডাক্তারের পরামর্শক্রমে ঔষধ সেবন করেন তাহলে থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

হাইপোথাইরয়েডিজম থেকে মুক্তির উপায়

মূলত থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি জনিত সমস্যা দেখা দিলে সেই সমস্যাকেই বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিজম। এই ধরনের সমস্যা মূলত বিভিন্ন ধরনের হরমোন নিঃসরণে বাধা প্রদান করে থাকে শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। আর তাই এই ধরনের সমস্যা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি হাইপোথাইরয়েডিজম থেকে মুক্তি পেতে চান সে ক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ুন। 

  • হাইড্রেট থাকুন। 
  • প্রসেসড ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করুন।
  • অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  চুলকানির ঔষধের নাম | চুলকানি দূর করার ক্রিম

Leave a Reply